The Astrological e-Magazine

সামুদ্রিক শাস্ত্র মতে আপনি কোন গ্রহ-জাতক

শাস্ত্রজ্ঞ জ্যোতিষী অধ্যাপক ঋষভ শাস্ত্রী


সামুদ্রিক শাস্ত্র মতে আপনি কোন গ্রহ-জাতক
শাস্ত্রজ্ঞ জ্যোতিষী অধ্যাপক ঋষভ শাস্ত্রী
সকল মানুষের জীবনে নবগ্রহের প্রভাব বিভিন্ন ভাবে বর্তমান থাকে। কিন্তু প্রত্যেকের ক্ষেত্রে বিশেষ একটি গ্রহের প্রভাব তার “দেহ-মন-আত্মাকে”-কে বিশেষ ভাবে প্রভাবিত করে ও জীবনে মুখ্য গ্রহের ভূমিকা গ্রহণ করে। ফলে সেই মানুষটিকে সেই গ্রহ প্রভাবিত ব্যক্তি বা গ্রহ-জাতক (Native) বলা হয়। জ্যোতিষে এটাই রাশি বা লগ্ন হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। আধুনিক করবিজ্ঞানে প্রধান গ্রহের প্রভাব অনুসারে জাতককে একটি বিশেষ গ্রহের জাতক বলে ধরা হয়। করতলের ক্ষেত্র, মুখ ও চেহারায় ওই লক্ষণ স্পষ্ট ভাবে ধরা পড়বে। যদি কোনও জাতকের করতলে, মুখে বা চেহারায় মঙ্গলের প্রভাব প্রবলভাবে বর্তায় তাহলে সেই জাতক-কে “মঙ্গলের জাতক” বা Marsian Native বলা হয়। বৃহস্পতি প্রভাবিত ব্যক্তিকে ”বৃহস্পতির জাতক” বা jupiterian Native বলা হয়। আবার শুক্র প্রভাবিত ব্যক্তিকে “শুক্রের জাতক” বা Venusians Native  বলা হয়। বিষয়টি গ্রহ-জাতক ও রাশিগত প্রভাবের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।  কে কোন গ্রহ-জাতক তা নির্ণয়ের জন্য “মুখ ও চেহারা”-ই প্রধান বিচার্য বিষয়। গ্রহ-জাতক নির্ণয়ের জন্য মুখ ও চেহারার প্রধান লক্ষণ গুলি সংক্ষেপে উল্লেখ করা হল।  

মেষ বা মঙ্গলের জাতক = মুখের গড়ন ত্রিকোণাকার, চোখ দুটি গোল ও বেশ বড় হবে। মাথার চুল কানের পাশে দিকে থাকবে, চুল খুব ঘন ও লালচে রঙের, পেশী বহুল চেহারা ও মাঝারি উচ্চতা। চোখের কোন লাল, ঘন ভ্রু, মুখে ব্রণ বা কাটা দাগ থাকতে পারে। চোখের দৃষ্টি স্থির ও আত্মবিশ্বাসী, গলার স্বর জোরালো। ঠোঁট বেশ মোটা, নীচের ঠোঁট ওপরের ঠোঁটের চেয়ে বড় হয়। দাঁতের সারি বড় ধরণের।    

বৃষ বা শুক্রের জাতক = মুখের গড়ন বেশ বড়সড় ও গোলগাল, উচ্চতা নাতি দীর্ঘ। কপাল চওড়া, কাঁধ দুটো বেশ চওড়া ও চতুষ্কোণ, আয়ত চোখ, দৃষ্টি অমলিন,শান্ত ও স্থির, গলার স্বর ক্রমশ নিচুতে শুরু হয়ে উঁচুতে  চলে যায়। নাকের ডগা ভারি, মোটা ও বেশ বড়, থাই গুলো ভারি ও সুগঠিত, দেহের চামড়া বেশ উজ্জ্বল ও মসৃণ। চেহারায় লালিত্য ও আকর্ষণ থাকবে।   

মিথুন বা বুধের জাতক = রোগাটে লম্বা গড়ন, মুখটা ডিম্বাকৃতি, লম্বা নাক, চিবুক ত্রিকোণাকার বা ছুঁচালো। চোখ টানা টানা, উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয়, সুগঠিত গলা, মাথার চুল কোঁকড়ানো, মুখশ্রী লাবণ্যময়, মুখে হালকা হাসির দীপ্তি থাকবে। গলার স্বর হালকা, দৃষ্টি বুদ্ধিদীপ্ত ও ইঙ্গিত পূর্ণ। গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণ। কথা বলার সময় হাত, পা ও কাঁধ নেড়ে কথা বলে, বেশী কথা বলার অভ্যাস। 

কর্কট বা চন্দ্রের জাতক = মুখের গড়ন গোলাকার বা লম্বাটে গোল। মাঝারি উচ্চতা, গলকম্বল ভারি, ভরাট গাল, শরীরের ওপরের অংশের তুলনায় নীচের অংশ বেশ ছোট। ঘন কুঞ্চিত চুল, চোখ সজল ও চোখের রঙ বাদামি, গলার স্বর কোমল, সামনের দিকে একটু ঝুঁকে হাঁটাচলা করে। দেহের চামড়া উজ্জ্বল ও মসৃণ। 

সিংহ বা রবির জাতক = দেহের গড়ন চৌকো ধরণের,মাঝারি উচ্চতা। চওড়া মুখ ও বড় ঠোঁট, হাত গুলো বেশ বড়সড়,, মোটা ভরাট থাই,সরু কোমর, চোখের মণি কটা ব পিঙ্গল বর্ণের, চোখের কোন লালচে বা রক্তবর্ণ । 

কন্যা বা বুধের জাতক = দোহারা চেহারা, খুব বেঁটেও নয় আবার লম্বাও নয়। মুখের গড়ন পান পাতার মতো, সুগঠিত গ্রীবা, ঠোঁট দুটো খুব সুন্দর, মুখশ্রী কমনীয় ও লাবণ্যযুক্ত। চোখের দৃষ্টি ধীর-স্থির ও শান্ত, দৃষ্টিতে গভীরতা আছে। কম কথা বলে, গলার স্বর কোমল এবং খুব আস্তে কথা বলে। 

তুলা বা শুক্রের জাতক = সুন্দর ও মানানসই দেহসৌষ্ঠব, চোখ দুটো উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয়, মুখে একতা সপ্রতিভ ভাব থাকে। সুগঠিত ও সুন্দর গ্রীবা, টিকালো নাক, মাথার চুল ঘন ও কুঞ্চিত। গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণ। চোখে মুগ্ধ ও কৌতূহলী দৃষ্টি।  

বৃশ্চিক বা মঙ্গলের জাতক = মুখের গড়ন লম্বা ধরণের, মাঝারি উচ্চতা,  মাথা ভর্তি ঘন চুল, চেহারা একটু ভারি, চোখ গোল,বেশ বড় ও সজল, চোখের তারা কালো। চওড়া বুক, থাই সুগঠিত ও ভরাট, দেহের অনুপাতে মাথাটা ছোট, দেহের উপরের ভাগ নীচের ভাগের চেয়ে বড়। ওপরের ঠোঁট ভেতর দিকে চাপা এবং হাসলে দাঁতের মাড়ি দেখা জায়। গলার স্বর ভারি ও তেজ দীপ্ত।  

ধনু বা বৃহস্পতির জাতক = লম্বা দোহারা চেহারা, চওড়া কপাল ও বড় নাক, মাংসল শরীর, কিছুটা চর্বি থাকবে,  মুখের গড়ন চৌকোনা, গায়ের রঙ ফর্সা বা পীতাভ হলুদ, মাথায় চুল কম থাকবে, দেহের ত্বক উজ্জ্বল ও লালিত্য পূর্ণ, সুগঠিত দাঁত, চোখ বেশ বড়, দৃষ্টি শান্ত, অমলিন ও স্বপ্নময়।    

মকর বা শনির জাতক = মাঝারি গড়ন, গোলাকার মুখ,চেহারায় একটু শীর্ণতা ও শুষ্কতা থাকবে। গোল চোখ, চোখের কোন একটু বসা, নাক বড়, দাঁতের ওপরের সারি নীচের সারির ওপর চেপে বসা, 

কুম্ভ বা শনির জাতক = লম্বাটে মুখের গড়ন, মাঝারি উচ্চতা, চওড়া বুক ও সরু কোমর, পীঠ, কোমর ও পাছা ভারি, শিরা যুক্ত লোমশ দেহ। চোখের দৃষ্টি তীক্ষ্ণ ও উজ্জ্বল, মাথার চুল পাতলা ও কটা রঙের, সুন্দর নাক, ঠোঁটের গড়ন সুন্দর আকর্ষণীয়। কথা কম বলে, দৃষ্টি শান্ত, প্রকাশ ও গভীর।  

মীন বা বৃহস্পতির জাতক = মুখের গড়ন চৌকো, গোলগাল দেহ মাঝারির থেকে দীর্ঘ উচ্চতা, দেহের মধ্যভাগ বেশী চওড়া,  দেহের গঠন সুঠাম ও সুন্দর, চওড়া কপাল, মোটা ঠোঁট, লম্বা ও উন্নত নাক, দেহের রঙ ফর্সা বা পীতাভ হলুদ, ত্বক উজ্জ্বল ও মাথার চুল ঘন, সজল গোলাকৃতি চোখ, চোখের কোনে একটু লালচে আভা থাকবে। দৃষ্টি শান্ত, গভীর ও অদ্ভুত মায়াময় ।    

জ্যোতিষী অধ্যাপক ঋষভ শাস্ত্রী

সকলে ভাল থাকুন ও সুস্থ থাকুন । 
।। জয় মা তারা।। 
।। সর্বেষাং মঙ্গলম ভবতু।।